শেষে ওদের লোকাল ড্রাইভার টিংকু সিংহের সৌজন্যে একটি কটেজে দুটি ঘর পাওয়া গেলো। একটিতে মিতিন, পার্থ ও বুমবুম আরেকটাতে মিতিনের বোন সহেলি, বর অবনী ও মেয়ে টুপুর ( মিতিনের সহযোগী)। তোমরা জানো নিশ্চই মিতিন একজন পেশাদার গোয়েন্দা । ওর এজেন্সির নাম থার্ড আই ।
তা যা বলছিলাম । কটেজটা বেশ ছিমছাম , সাজানো গোছানো। কিন্তু গোল বাঁধলো যখন মিতিনের ছেলে বুমবুম কম্পিউটার টেবিলের ড্রয়ারে একটা পেনড্রাইভ কুড়িয়ে পেলো। কৌতূহলী মিতিন আর ওর স্যাঙ্গাত টুপুর (বোনঝি) তৎক্ষণাৎ বসে পড়ল পেনড্রাইভে কি আছে দেখতে।
ও বাব্বা:! এ কি যে সে ব্যাপার। পেনড্রাইভ ভর্তি যে নাম করা আঁকিয়ে নিকোলাস রোয়েরিকের আঁকা পেইন্টিংয়ের ফটোতে ভরা!! আবার সে রাত্রেই কটেজের মালিক বিভব শর্মার সঙ্গে স্থানীয় এক চিত্রকর , বৈজনাথ রাইএর, কথা কাটাকাটি কানে এলো। বৈজনাথ রেগেমেগে চলে যাবার পর বিভব শর্মাকে পরের দিন মিতিন প্রশ্ন করতে ছাড়ে?
জানা গেলো বৈজনাথ কে নাকি দুজন টুরিস্ট, যারা এই কটেজেই, মিতিনদের ঘরখানাতে উঠেছিল, তিনটি চিত্র বানাতে কিছু অগ্রিম টাকা দেয়। বৈজনাথ পেইন্টিংগুলি বানিয়েও দ্যান। কিন্তু বাকি টাকা বৈজনাথকে না দিয়েই সেই দুজন টুরিস্ট হাপিস। বোঝো কাণ্ড!
ওই দিকে বিকেলে দশহরার মেলাতে বৈজনাথের সঙ্গে মিতিনের আকস্মিক ভাবে দ্যাখা । মিতিন গল্পো জুড়ে দেয়। বৈজনাথ কথায় কথায় জানান যে তাঁকে ওই দুজন টুরিস্ট রোয়েরিক সাহেবের তিন খানা আঁকা ছবির নকল করতে দিয়েছিল।
পর দিন আর সোজা মানালি যাওয়া হলো না। মানালির পথে নাগোরে রোয়েরিক সাহেবের আর্ট গ্যালারিতে ঢু মারা ঠিক হলো। পোঁছে এ কি ধাঁধা ?
আর্ট গ্যালারিতে কেউ বা কারা রাত্রে গ্রিলের দরজা কেটে জানালার কাঁচ ভেঙে ঢুকবার চেষ্টা করেছে। রাতের গার্ডকে হাত পা মুখ বেঁধে খাদের ধারে ফেলে রাখা হয়েছে। খানাতল্লাশি চলছে। স্বয়ং ডি এস পি, আশুতোষ শাহের পর্যবেক্ষণে।
মিতিন নিজের পরিচয় দিল ডি এস পি ও গ্যালারির ম্যানেজার, কিশনলাল দুগ্গর কে। পেনড্রাইভটি দেখিয়ে জানালো কি ভাবে সেটা পেয়েছে আর কী আছে তার মধ্যে। একটি অনুরোধ ও রাখলো। ফার্স্ট ফ্লোরে, যেখান, গরাদ ও কাঁচ ভাঙ্গা হয়েছে, সেখানকার ছবিগুলো আবার নিরীক্ষণ করা হোক।
কিছুক্ষন পর কিশনলাল দুগ্গর ফিরে এসে মাথায় হাত দিয়ে বসলো। হ্যাঁ মিতিন যা সন্দেহ করেছে ঠিক তাই। তিনটি ছবির অরিজিনাল বেমালুম লোপাট ও তার জায়গায় তাদের কপি রাখা। আশুতোষ শাহ রেগে কাঁই। এর একটা হ্যস্ত ন্যস্ত করতেই হবে। কিশনলাল তো মিতিনকে বলেই ফেললো একটু ব্যাপারটা দেখে নিতে মানে পুলিশী ইনভেস্টিগেশনের সঙ্গে সঙ্গে একটা প্যারালাল ইনভেস্টিগেশন চালাতে। মিতিন এক কথায় রাজি।
তারপর আর কি ? কুলু থেকে নাগোর থেকে মানালি থেকে মণিকরন সাহাব থেকে আবার কুলু চোরদের পিছন পিছন দৌড়ানো। শেষমেষ মিতিন বিজয়িনী।
গল্পটি ইউটিউবের থ্রিলারল্যান্ডে শোনা। ভালো লাগলো ওদের উপস্থাপনা। তাই জানালাম। ভালো লাগলে শুনো। সুচিত্রা ভট্টাচার্যর লেখা মিতিন মাসি সিরিজের
কুড়িয়ে পাওয়া পেনড্রাইভ।
এই গল্পের মূল আকর্ষণ হলো কুলু মানালি এবং তার আশেপাশের সব জায়গাগুলোর বিষদ বর্ণনা। আর ঐতিহাসিক শিল্পী নিকোলাস রোয়েরিক ও তার আর্ট গালারিটিকে প্লটে সম্মিলিত করা।
বইটি আমাজনে উপলব্ধ ও দেখলাম। পড়তেও পারো।
আবার দ্যাখা হবে...
টাটা
No comments:
Post a Comment