"Vanderloost -Speak Your Heart Out" is a vagrant and bizarre conglomerate of consequential and inconsequential moments, transient and stagnant thoughts, fickle and rigid perceptions, forgettable and not so forgettable anecdotes and experiences, day to day trivia, cornucopia of hard hitting realities and pristine imageries and most importantly people whom I think I know , whom I'd like to know and whom I do not want to know.
Friday, June 08, 2012
বালগোপাল
জানালার খড়খডি দিয়ে সরু রোদের এক ফালি মশারীর গায়ে লেপটে পডার সাথেসাথেই ঘুমটা ভেঙ্গে গেল । এখানে ভোরের হাওয়ায় পাখীর গান ভেসে আসে না । গাছই নেই তো পাখীর কলরব ! ভোরের শব্দের চেনা সুর একটাই । পূজার ঘর থেকে টুং টাং ঠুং ঠাং আওয়াজ । পিসীর দিনচর্জা শুরু । কম করে একটি ঘন্টা ঠাকুরের সেবা যত্ন চলবে । রাতে তাঁদের শয়ান দেওয়া হয়েছিল - এখন তাঁদের ওঠানো, চান করানো , পূজো দেওয়া , মন্ত্র পড়া আর সব শেষে মনে করিয়ে দেওয়া ঠাকুর আমরাও আছি একটু দেখো - এই আর কী । ঠাকুর দেবতারা যদি এমনি ভাবে ঘুমুতে জান তাহলে ভক্তদের যে কী অবস্থা হয় তা খবরের কাগজ পড়লেই টের পাওয়া যায় ।
পিসেমশাই মাঝে মধ্যেই ঠোনা দিয়ে বলেন ," হু:! ভগবানের আবার এত ঘুম কীসের ?" পিসী মুখ ঝামটা দিয়ে উত্তর দেন , " দেখো, তুমি আমার পেছনে বেশী লাগতে এস না বোলে দিলাম" । আমি মুখ টিপে হাঁসি আর মজা দেখি ।
পিসীর যতক্ষণ পূজো পর্ব চলে ততক্ষণ আমার কাজ হলো উঠে চায়ের জল বসানো আর চায়ের সরঞ্জাম গুছিয়ে রাখা । পূজো পর্বর পর চলে চা পর্ব । এ বাড়ীতে পর্বের আর শেষ নেই ।পুজো শেষে চায়ের ট্রে হাথে করে আমার প্রবেশ । পুজোর ঘরের একপাশেই খাবার বড় টেবিল (ভাড়া বাড়ি তাই জায়গা কম- তবে নিজের বাড়িতে, যেটা এখন নির্মাণাধীন , পূজোর আলাদা ঘর চাই , পিসী বলে দিয়েছেন । আর পিসীর কথা না শোনা পিসেমশাইয়ের পক্ষে অসম্ভব )। চায়ের ট্রে রাখতেই পিসী এসে খাবার টেবিলে বসে পা দোলাবেন কিছুক্ষণ । তারপর চায়ের পটে চায়ের পাতা আর আন্দাজ মতন জল ঢেলে কিছুক্ষণ পুরোনো দিনের গান গুনগুন করে গাইবেন । চাও বাপু যেসে নয় - শ্যামবাজারের অরফ্যান এর (দোকানের পুরো নামটা আর মনে নেই ) একশো কুড়ি টাকা কিলো চা - আমি কুড়ি বছর আগেকার কথা বলছি , এখন নিশ্চই দাম আরও বেড়ে গেছে । সেই চা বানানোর কায়দাই নাকি আলাদা । পিসীর সময় গোনা আছে । তিন মিনিট কিছু সেকেন্ড পরে সোনালি পানীয় টি পট থেকে তিনটে কাপে ঢালা হবে । তারপর পরিমাণ মতন দুধ ও চিনি থুড়ি চিনি তো চায়ের কাপে আগেই ঢালা হয়ে গেছে । এ বাড়িতে চায়ের কাপ প্লেটের ওপর খরচ সব চেয়ে বেশী - নানা বিধ আকার , রং ও কারুকার্য করা কাপ প্লেট কাঁচের আলমারিতে সাজানো পাবে । চায়ের পরিমাণ , রং, স্বাদ, গুন ইত্যাদি কিছুতে যদি কোনক্রমে একটু এধার ওধার হ ল কি মেজাজের সঙ্গে দিনও খারাপ যায় ।
পিসীর একরাশ ঠাকুর দেবতার মধ্যে সব চেয়ে প্রিয় একটি পিতলের ছোট হামাগুড়ি দেওয়া বালগোপাল । পিসী নি:সন্তান । তাই বোধহয় বাচ্চা কেষ্ট ঠাকুরের মুর্তিতেই নিজের না পাওয়া সন্তানকে খুঁজে বেড়ান । বালগোপালকে রোজ শোয়ানো , বসানো, খাওয়ানো-দাওয়ানো , ঘুম পাড়ানো আর ঘুম থেকে জাগানো এই নিয়েই পিসীর দিনের অনেক খানি সময় কেটে যায় । মাঝে পিসির পিসেমশাইয়ের সঙ্গে একপ্রস্থ কথা কাটাকাটি হয়ে গেছে - বালগোপালের এক খানা সোনার মুকুট কিনে দিতেই হবে। পিসেমশাই গররাজি ছিলেন, পিসী নাছোড় বান্দা । শেষ পর্যন্ত স্যাঁকরা ডেকে অর্ডার দেওয়া হয়েছে - কিছু দিনের মধ্যেই মুকুট এসে পড়ল বলে ।
চায়ের কেতলিটা গ্যাসে বসানোর সঙ্গে সঙ্গে ঠুক ঠুক করে পেছনের দরজায় ঘা । । রান্নাঘরের দুটো দরজা - পিছনের আর সামনের । সামনের দরজা দিয়ে হল ঘর , খাবার ঘর অর্থাৎ বাড়ির ভিতর এবং বাড়ির লোকেদের যাতায়াতের পথ । পিছনের দরজাটা এক ফালি সরু গলিতে গিয়ে পড়ে । গলি দিয়ে সোজা গেলেই পিছনের দরজা । বাড়ির ঝি , জমাদার , মাছওয়ালা , মালি , সবজিওয়ালা, ইত্যাদির এই পথে আবাগমন । পিসীর পূজোর ঘরের জানালাটাও এই গলিতেই খোলে । এখন যদিও বন্ধ । পূজোর সময় পিছনের দরজায় কারোর আসা পিসী খুব একটা পছন্দ করেন না । বিশেষ করে জমাদার । " মরার দল ভালো ভাবে পূজোটাও সারতে দেবে না " - পিসীর চিল চিত্কারে ঠাকুর দেবতার দল এমনিই ঘুম থেকে ধড়ফ ড় করে উঠে পড়ল বলে।
পা টিপে টিপে গিয়ে দরজা খুলে দেখি যা ভেবেছি তাই - একগাল হলুদ দেতো হাঁসি , হাতে ঝাড়ু , ঘর্মাক্ত কলেবর , চুলগুলো উসকো খুসকো , গায়ের বেনিয়ানটা জায়গায় জায়গায় ছেঁড়া আর ধুতিটা ডবল করে হাঁটুর উপর ভাজ করে কোমরে গোজা , পায়ে চটি নেই । রোজকার ছবি তবুও রোজ দেখে নতুন মনে হয় । আর রোজই ভাবি পিসিকে বলব ওকে এক জোড়া নতুন বেনিয়ান আর ধুতি আর পিসেমশাইয়ের পুরনো একটা চটি দেবার কথা । আর রোজই ভুলে যাই ।খুব ই তুচ্ছ ব্যাপার কিনা তাই ভোলাটাও অবশ্যম্ভাবী ।
এদিকে কল খুলে জল নিয়ে ঝপাক ঝপাক করে ঝাড়ু মারতে শুরু করেছে লোকটা ।নোংরার থলেটা আগেই তুলে নিয়েছে । ও র ঝাড়ু , বালতি সব আলাদা - পিছনের গলিতেই রাখা থাকে, কেউ সেগুলোতে হাত দেয় না ।ও র কাজের অবধি মিনিট দশেকের ব্যাপার কিন্তু এই মিনিট দশেকই ভারী পড়ে যেদিন ও না আসে ।"বাড়িটাকে অপবিত্র করে ছাড়লে " পিসীর দোষারোপের শেষ থাকে না ।
জল ভালো ভাবে কাঁচিয়ে এক গাল হেঁসে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলে , " দিদি হয়ে গেছে "। ঘাড় কাত করে হাঁসতে হাঁসতে ই বলে , "আসি তাহলে"। ওর হাঁসিটা বড় সরল , ছোটো শিশুর মতন । অশিক্ষিত তবুও ভারী ভদ্র . অমায়িক । আমি বলি ," এস "। দরজার কাছে পৌঁছতে পৌঁছতে হঠাত খেয়াল হয় লোকটা রোজ আসে তবুও কখনো ওর নামটা জিজ্ঞাসা করা হয়নি । ডেকে উঠি "ও ভাই শোনো । তোমার নামটা জানি কী ?"
ফিরে দাঁড়িয়ে আবার সেই সরল হাঁসির ছোঁয়া আনে ঠোটের কোনে । লাজুক ভাবে বলে " আমার নাম ? দিদি , আমার নাম ? বাল গোপাল । আপনে দিদি আমায় গোপাল বইলা ডাইকবেন "। আমার মুখে কথা সরে না । মাথা নেড়ে সায় দিই ।
দরজা দিয়ে ফিরে আসতে আসতে গ্যাসের উপর গরম জলের কেতলির হুশ হুশ শব্দ পাই ।পূজোর ঘরের দরজা খোলার আওয়াজ। পিসির গলা - চেঁচিয়ে বলেন "কেরে মিঠু কে ওখানে "? আমি বলি , " কেউ না " । মনে মনে বলি কর্ম ব্যস্ত , ঘর্মাক্ত , মলিন , জীর্ণ বস্ত্রে আবৃত গোপাল - তোমার বাড়ি রোজ আসে যাকে দ্যুত্কারে , অবহেলায় আমরা রোজ দূরে সরিয়ে দিই ।
কেতলির মুখ দিয়ে ধোঁয়া বেরোয় । গ্যাস বন্ধ করে দিই । এখন চা পর্বর শুরু । রোজকার কাজে মন দিই ।
পড়লাম...গল্পের থিমটা কিন্ত দারুন ছিল amateur লেখিকা হিসেবে মন্দ না তবে গীতা আমি আপনাকে বলব প্রচুর বাংলা পড়ুন ....বাংলা পত্রিকা গুলোর সাহিত্য পাতা দেখতে পারেন....ঈদ ও পুজো সংখ্যা ..... এখন কোন ধরনের বাংলা চর্চা হচ্ছে বুজতে পারবেন...যদিও এখনকার বেশিরভাগ গল্পগুলোই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যৌনতার সুরসুরি মাখানো সাহিত্য জগতে আপনার পদচারনা নিঃসন্দেহে অনেক দিনের(আমার চেয়ে তো বটেই)....অনধিকার চর্চা হলে ক্ষমা করবেন... আপনাকে উপদেশ দিচ্ছি না ..... শুভাকাঙ্খি হিসেবে মতামত দিচ্ছি মাত্র যদি নিজের জন্য লিখে থাকেন তাহলে বলব আপনার মত করেই লিখুন কিন্ত যদি পাঠকের জন্য লিখেন তাহলে বলব গল্পে থাকুক না একটু রহস্য..একটু রোমান্স...প্রেম...মানসিক দ্নন্দ.....শহুরে মানুষের গল্প...জেনারেশন গেপ ...এগুলো উঠে আসুক না আপনার সামনের লেখাগুলোতে শব্দ চয়নে ও গল্পের সমাপ্তিতে যে দুর্বলতা গুলো আছে কাটিয়ে উঠবেন আশা করি.....নিজেকে একটু সময় দিন
পড়লাম...গল্পের থিমটা কিন্ত দারুন ছিল
ReplyDeleteamateur লেখিকা হিসেবে মন্দ না
তবে গীতা আমি আপনাকে বলব প্রচুর বাংলা পড়ুন ....বাংলা পত্রিকা গুলোর সাহিত্য পাতা দেখতে পারেন....ঈদ ও পুজো সংখ্যা ..... এখন কোন ধরনের বাংলা চর্চা হচ্ছে বুজতে পারবেন...যদিও এখনকার বেশিরভাগ গল্পগুলোই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যৌনতার সুরসুরি মাখানো
সাহিত্য জগতে আপনার পদচারনা নিঃসন্দেহে অনেক দিনের(আমার চেয়ে তো বটেই)....অনধিকার চর্চা হলে ক্ষমা করবেন... আপনাকে উপদেশ দিচ্ছি না ..... শুভাকাঙ্খি হিসেবে মতামত দিচ্ছি মাত্র
যদি নিজের জন্য লিখে থাকেন তাহলে বলব আপনার মত করেই লিখুন কিন্ত যদি পাঠকের জন্য লিখেন তাহলে বলব গল্পে থাকুক না একটু রহস্য..একটু রোমান্স...প্রেম...মানসিক দ্নন্দ.....শহুরে মানুষের গল্প...জেনারেশন গেপ ...এগুলো উঠে আসুক না আপনার সামনের লেখাগুলোতে
শব্দ চয়নে ও গল্পের সমাপ্তিতে যে দুর্বলতা গুলো আছে কাটিয়ে উঠবেন আশা করি.....নিজেকে একটু সময় দিন
Geetashree হয়ে উঠুক না আমার প্রিয় লেখকদের একজন
শুভেচ্ছা নিন ''বালগোপাল'' ভাল লেগেছে বলে
আপনার উপস্থিতি, সমালোচনা ও advice এর জন্য অশেষ ধন্যবাদ । আমি চেষ্টা করব...
Delete