Sunday, August 19, 2012

সাপ্তাহিকী

শেষে বৄষ্টি নামল

অনেক দিন পর ...।

মন মাতানো, ঘর ভাসানো জলোচ্ছ্বাস নয়।  ইলষেগুঁড়ি ও নয়। যখন আপন ছন্দে , আকাশ ঝরে, মধ্য লয়ে, তেমন ধারা বারি বর্ষণ। এ বরিষণ  উদাস করে না। মন ভেজায় না । একাকীত্বের অনুভব করায় না। নস্ট্যাল ? – একেবারেই  না !! শুধু কাপের পর কাপ ধোঁওয়া ওঠা , গরম চা আর কড়কড়া বেগুনি খাওয়ার ইচ্ছা জাগায়। দেখলেন তো বাঙ্গালির মন খাওয়া ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারে ?

ব্লগ লিখতে লিখতে এর ই মধ্যে বৄষ্টি থেমে গেছে । তবে আকাশ এখন ও মেঘাচ্ছন্ন । হয়তো আবার...

যাই  রান্না চড়াই গে ।

***

আজকে সকাল থেকে কেন জানিনা ভীষণ বিরক্তি বোধ হচ্ছিল । তাই কোনো কাজই  ঠীক সময় মতো হয়ে ওঠেনি । এমন কি প্রাতঃভোজন ও না (কী মুশকিল আবার সেই খাবার কথা!)। পৌনে এগারোটার সময় দু খানা কড়কড়ে  টোস্টের সঙ্গে পাস্তা সিজনিং দেওয়া গরম-গরম ডিমের ওম্ লেট  খেয়ে তিরিক্ষি মেজাজটা একটু নরম, একটু ধাতস্থ হল ।

***

সব দিন সমান যায় না । এটা শাস্ত্রোক্তি না প্রাজ্ঞোক্তি, জানি না। তবে তলিয়ে দেখলাম কথাটা ঠীক । প্রত্যেক সোমবার ঘুম থেকে উঠে মনে হয়, “উফ! আবার সেই সোমবার। ধুৎ ত্তেরি !!!” খারাপ লাগাটা অহেতুক । জড়তা বোধ  একান্তই মানসিক। ছুটি ফুরিয়ে যাওয়ার দুঃখ নার্সারি থেকে । তাই ব্যারামটা নতুন নয়। গুন গুন করি “ক্লান্তি আমার ক্ষমা কর প্রভু”।

সহকর্মীদের সঙ্গে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে দেখেছি প্রতি সোমবারের এই নিয়মিত কিন্তু অকারণ বিষন্নতায় প্রায়সই সবাই ভোগে (রোগটা কী সংক্রামক?)  – অবশ্য কিছু অত্যন্ত কর্মপিপাসু চিনির বলদ ব্যতীত যারা অভ্যাসবশতঃ ঘানি টানতে ভালবাসেন এবং তার জন্য জীবন  উৎসর্গ করতে ও পেছপা হন না। তাঁদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সপ্রশংস অভিনন্দন।

আমি এই শ্রেণী থেকে অবশ্যই বাদ, বলাই বাহুল্য । তবে এটা জেনে আশ্বস্ত হই যে আমি স্বাভাবিক (দ্রাক্ষাফল টক?) মনস্তাত্তিকের অধিকারিণী।

মঙ্গলবার – আর ও কিছুটা নরম্যাল হই -  বাস্তবিকতার সম্মুখীণ, জীবনধারণের তাগিদে দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের  ব্যস্ততায় গা ভাসিয়ে দিই – নিয়ম মাফিক ৯।৩০ – ৫।৩০ আপিসের কাজ অতিশয়  অমানবিক অত্যাচার ও বস্ কে নিতান্তই পাশবিক বলে অতটা মনে হয় না।  

বুধ ও বৄহস্পতিবার কিছু স্ব-সৄষ্ট ডেড লাইন্স ( বাংলা তর্জমাটি কীরুপ হবে – মৄত পঙক্তি না মারণ পঙক্তি ?) এর সংযোজন এবং সময়ানুযাই সেই সব কর্মসূচীর সফল-সমাপ্তির তাড়নায় দুটি দিন হুড় হুড় করে কেটে যায়।       

শুক্রবার – মন ফুরফুরে । অসম্ভব উত্তেজনা ও আনন্দর অনুভূতি। এক অদম্য   উৎসাহে শরীর টগবগে । জীবনে অনেক কিছু করার আছে/ করা চাই / করতে হবে – ক্রমানুসারে এই ধরণের ভাবনা চিন্তা মনকে সম্পূর্ণ রুপে একাধারে আচ্ছন্ন , সতেজ, একাগ্র ও কর্মানুরাগী করে তোলে ।

অবশ্য শুক্রবার রাত থেকেই শরীরে ঢিল । ওঃ ! এখন তো অঢেল সময়! অতএব, বিলাসিতায় গা ভাসানো ( বই পড়া, টিভি/সিনেমা দেখা, গান শোনা, নেটে ঘোরাফেরা, কিছু লেখা, মাঝে মধ্যে  বাহিরভ্রমণ   ইত্যাদি - এও দরকার  কী বলেন ?)

শনিবার/রবিবার – কোথা দিয়ে কেটে যায় বোঝা ভার। এই আটচল্লীশটি ঘন্টায় বাড়ির ও বাইরের যাবতীয় কাজ, আগামী সপ্তাহের তৈয়ারী, পারিবারিক কর্তব্য,  সামাজিকতা রক্ষা এবং সর্বোপরি নিজের কিছু প্যাশনানুসরণ (শেষেরটির জন্য সর্বাধিক কম সময় প্রাপ্তি) । পরিণাম – সময়াভাব ও রবি-বাসর জাগা ।

তারপর ? আবার সেই হ্যাংগওভার...

নীলাভ সোম ( মন্ডে ব্লুর এর চাইতে ভালো বঙ্গানুবাদ পারলাম না)। সত্তর দশকের কার্পেন্টার্সের সেই ঐতিহাসিক গানের কলি মনে পড়ে যায় “ রেইনি ডেজ এ্যান্ড মন্ডেজ অলওয়েজ গেট মী ডাউন...”  

আমার সপ্তাহের দিনপঞ্জিকা যথারিতী কম-বেশী হলেও এই রুপ ।

তবে জানতে ইচ্ছে করে, আপনাদের ও কী ... ?

***