আমি যখন ছোট ছিলাম সারাদিন স্বপ্নের রাজ্যে বিচরণ করতে ভালবাসতাম । আমাদের বাড়ির সামনে ছিল মস্ত বড় একটা পার্ক । ছাদের ঘরের জানালায় উঁকি মারত বিরাট একটা নিম গাছের ডাল । তার কচি, সবুজ পাতাগুলো হাওয়ায় দুলে দুলে হাতছানি দিত আমায়। দিনের বেলায় সূর্যের আলোর ঝিকিমিকি পাতার সবুজের উপর যখন খেলা করত তখন সুবর্ণ বনানীর শোভা মন ও চোখ দুই কেড়ে নিত। সেই খেলা দেখতে দেখতে কত যে ঘণ্টা কেটে যেত তা আর বলার নয় ।বলা বাহুল্য পড়াশোনা খুব একটা বেশী হত না এবং তাতে মন ও ছিল না বিশেষ ।
এখন জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে চোখে পড়ে আকাশ ঢাকা কংক্রিটের বিল্ডিং । সামনেই এম সি ডির ছোট একটা পার্ক যেটা অযত্নে জংগলে পরিণত হয়েছে । সরকারি মালীগুলো বড়ই বেয়াড়া – শত ডাকলেও আসে না । তাই পরিষ্কারের পাট অনেক আগেই উঠে গেছে । ফলে কিছু আবাসী পার্কটাকে ময়লা ফেলার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করেছে ।
এই ফ্ল্যাটে আসার পর শখ করে পার্কে একটা নিম গাছের চারা পুঁতে দেওয়া হয়েছিল । তখন পার্কটা পার্কই ছিল – বনে পরিণত হয়নি । সেই চারা আপন উৎসাহেই বেড়ে উঠে বিশাল ছায়া ঘেরা বৃক্ষ হয়ে আকাশের সাথে নীরবে কথোপকথন করত । কিছু মাস হল গাছটা দেখি ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে ।
চড়ুই
পাখী আজকাল খুব একটা নজর পড়ে না। দু একটা গাছ ফ্ল্যাটের সামনে পুঁতেছিলাম –
পাতাবাহার, ক্রোটন, মানি প্ল্যান্ট, চাঁপা। এবার গরমে দেখি প্রায়ঃ অনেক গাছই ঝলসে
পুরে যাচ্ছে।
সেই
সোনালীর খেলা, আকাশের মেলা, হাওয়ার দোলা, মন ভোলানো সবুজের ছোঁয়া আর কী কখন ফিরে
পাওয়া যাবে ?
তাই ভাবি...