মাত্র সুয্যি মামা অস্ত গেছেন। কলিং বেলের টুং টাং আওয়াজ। ভাবছি এখন কে?
হর বিলাশ দরজা খুলছে শব্দ পেলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘরে একগাল হাসি নিয়ে আমাদের মিতিনের প্রবেশ। ঘর সন্ধ্যের ছায়ায় ঝিম মেরে ছিল। এবার আলোকিত হলো।
"আরে! কি ব্যাপার মিতিন যে।"
মিতিন আমাদের পাড়ার মেয়ে। সেই ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি। ভারি চৌকস। যেমন পড়াশোনায় তেমনি খেলাধুলায়। আবার ক্যারাটে চ্যাম্পিয়ন ও। ব্ল্যাক বেল্ট। ওকে সেই ছোট্ট থেকে দেখছি। আমার আদরের মিতিন। এখন আবার গোয়েন্দাগিরিতে নেবেছে । মিতিন যে কিছু ভিন্নধর্মী কাজ করবে আমি আগে থেকেই জানি। তাই আশ্চর্য হইনি। ওযে এক্কেবারে অন্যধরনের মেয়ে।
এক ভাঁড় রসগোল্লা খাবার টেবিলে রাখতে রাখতে মিতিন বললে, " কেসটা সলভ হলো পিসী।"
এটা এখন একটা নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে গেছে। কোনো কেস সলভ করার পর মিতিনের মিষ্টি নিয়ে আসা। তারপর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কেস নিয়ে আলোচনা। কি ভাবে ও কেসটা সলভ করলো। কি কি করলে আরো সহজ ও কম সময়ে কেসটা সলভ হতো। এই সব। আমার চাকুরি জীবনের কিছু কিছু অভিজ্ঞতা ওঁর সঙ্গে শেয়ার করি যাতে ওঁর পরবর্তি কেসে কাজে লাগে।
"বুঝলে পিসী, এবার ছিল এক ব্ল্যাকমেইলের কেস। সুন্দরী মেয়ের বয়স্ক ধনী স্বামী। নতুন বিয়ে হয়েছে। মাত্র কিছু মাস। তারপরেই অজ্ঞাত এক পুরুষের ভর দুপুরে মেয়েটিকে ফোন। তাঁর বিবাহের পূর্বের কেচ্ছা ফাঁস করার হুমকি। টাকা না দিলে চুপ হবে না সে। তারপর সেই মেয়ে মৃত শ্বাশুড়ির গয়না বিক্রি করে টাকা যোগায় ব্ল্যাকমেলারকে । এতে ওকে সাহায্য করে তার পূর্ব প্রেমিক। কিন্তু ব্যাপারটা কেঁচে গেলো যখন সেই প্রেমিক ব্ল্যাকমেইলারের পরিচয় পেলো। প্রেমিকাকে সে কে জানানোর আগেই প্রেমিক খুন। তারপর কেস আমার হাতে। প্রেমিকার স্বামীই আমার দ্বারস্থ হন ভীত স্ত্রীর কাছ থেকে সব জেনে।"
শুনে আমি স্তম্ভিত, "বলো কি? এযে উপন্যাসের ও বাড়া।"
"তবে? বলছি কি?" বলল মিতিন।
এরপরের বিষদ আলোচনা আর লিখছি না।
সুচিত্রা ভটটাচার্য দেবি মিতিনের এই কেসটাকে পুঁথি গত করেছেন।
পড়ে দেখুন "পালাবার পথ নেই"।
রূপই কি মেয়েদের সব চেয়ে দামী অলঙ্কার ?
না সুশিক্ষা?
কুকর্মের ফল কি এই জীবনেই পাওয়া যায় ?
সব হিসাব কি এই জন্মেই শোধ হয় ?
আর লিখছি না।
বাকিটা সুচিত্রা দেবির কাহিনীতে প্রকাশ্যমান ।