যেমন বাস স্ট্যান্ডে বাসের জন্য অনেক ক্ষণ অপেক্ষারত থেকে সময়ে বাস না পাবার আক্ষেপ জানাতেন পাশের যাত্রীকে, "পইলে ২১৩ নম্বর বাস বহুত ঘন ঘন আতা থা। আজকাল ক্যা হো গেয়া। অনেক প্যারাশানি হোতা হ্যায়।" পাশের আগুন্তুকটি ও কি বুঝে মাথা নাড়িয়ে সায় দিতেন।
একবার বাসে চড়ে মালভিয়া নগর যাচ্ছিলেন সেই মেসোমশাই। জায়গাটি অপরিচিত হওয়ায় বাসের কন্ডাক্টর কে উনি অনুরোধ জানালেন, " মালব্ব নগর আনে সে হামকো লামা দেনা"। কন্ডাক্টরটি ও ছিল রসিক বটে। স্টপ টি আসাতে উনি মেসোমশাইকে বল্লেন, "অব আপ লাম যাও"।
আমার মা বিবাহের পূর্বে অনেক বছর দিল্লীবাসিনী ছিলেন। সেই দেশ বিভাগের আগে মামাদের কাছে আসা তারপর আর ফিরে যাওয়া হয়নি। কিন্তু মার হিন্দীতে ও বাংলা টান ছিল প্রবল। মা কিছুতেই হ্যায় বলতে পারতেন না। হয়ে যেতো হায়। আমরা এ নিয়ে প্রচুর হাঁসি ঠাট্টা করতাম।
আমাদের বাড়িওয়ালি ছিল ঠেট পাঞ্জাবি। কিন্তু মা দিব্যি ওঁর সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যেতেন। উনি ওনার ভাষায় মা নিজের ভাষায়। পরে মাকে যখন আমরা জিজ্ঞেস করতাম উনি কি বললেন মা বুঝেছেন কিনা মা ঘাড় নাড়িয়ে জবাব দিতেন, "না"। ওনার ও অবস্থা নিশ্চই ছিল তথৈবচ কিন্তু দুজনে দুজেনের কথা সসম্মানে ও সাগ্রহে শুনতেন অধৈর্য্য না হয়ে। একেই বোধহয় সভ্যতা বা ভদ্রতা বলে।
তখন কার দিনের মানুষরা ভিন্ন প্রকারের ছিলেন। তাদের বোধ, সংস্কার, ভদ্রতা জ্ঞ্যান ছিল অন্য। আজ তাঁরা নেই । সেই মুল্যবোধ ও আর নেই।